khagrachari Plus
খাগড়াছড়িশনিবার , ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Khagrachari plus ads
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দীঘিনালার কাশবন: পাহাড়ের বুকে শরতের সাদা কবিতা

আরিফুল ইসলাম মহিন
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪:১৮ অপরাহ্ণ ১৮৬ জন পড়েছেন
Link Copied!

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের রথীচন্দ্র কার্বারী পাড়ায় চোখে পড়ে অপার্থিব এক দৃশ্য। পাহাড়ের বুক জুড়ে বাতাসে দুলছে শুভ্র কাশফুল, যেন শরতের আগমনী বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর ঋতু। শুভ্রতায় মোড়া এই কাশবন প্রতিদিনই টেনে নিচ্ছে অসংখ্য দর্শনার্থী ও প্রকৃতিপ্রেমীকে।

বর্ষা বিদায় নিয়ে শরতের আবির্ভাব পাহাড়ি জনপদকে দিয়েছে নতুন সাজ। পাহাড়ি ঝর্ণার তীর, ছোট-বড় টিলা আর ফাঁকা জমিনে সারি সারি কাশফুল যেন কবিদের কাব্যে বর্ণিত শরতের রূপকে বাস্তবে ফুটিয়ে তুলেছে। সকাল-বিকেল বাতাসে দোল খাওয়া কাশফুল এনে দিচ্ছে এক অন্যরকম শান্তি ও প্রশান্তি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন— “শরৎ, তোমার শিশির-ধোয়া কুন্তলে বনের পথে লুটিয়ে পড়া অঞ্চলে।” দীঘিনালার কাশবন যেন সেই পংক্তির জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। কাজী নজরুল ইসলাম আর জীবনানন্দ দাশের কবিতার মতোই এখানে দাঁড়িয়ে মনে হয় প্রকৃতি নিজেই লিখছে নতুন কবিতা।

কাশবন দেখতে আসা দর্শনার্থী আল আমিন বলেন, “কাশফুল, পাহাড় আর আকাশের মেলবন্ধন এমন এক দৃশ্য তৈরি করেছে যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এখানে এলে মন ভরে যায় প্রশান্তিতে।”
আরেক দর্শনার্থী জ্যাক ত্রিপুরা জানান, “বন্ধুদের সঙ্গে এই কাশবনের ভেতর হাঁটার অনুভূতি একেবারেই অন্যরকম। প্রকৃতির এই রূপ দেখলে মনে হয় শহরের সব ক্লান্তি ধুয়ে যায়।”

স্থানীয়রা বলেন, কাশফুলই শরতের আগমনী বার্তা বহন করে। এ ফুলের আবির্ভাব মানেই উৎসবের মৌসুম, শীতের আভাস এবং প্রকৃতির চিরন্তন সৌন্দর্য। প্রকৃতিপ্রেমীরা মনে করেন, কাশফুল শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, জীববৈচিত্র্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

যদি এসব কাশবনকে পর্যটনবান্ধবভাবে সাজানো যায়, দীঘিনালা হয়ে উঠতে পারে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অনন্য গন্তব্য।

শরতের এই কাশবন পাহাড়ের বুকে এক জীবন্ত ক্যানভাস, যেখানে প্রতিটি কাশফুল যেন কবিতার শব্দ, প্রতিটি বাতাসের দোলা যেন সঙ্গীত, আর প্রতিটি মেঘ আকাশে আঁকা তুলির আঁচড়ের মতো মনে হয়।