প্রকৃতির সৌন্দর্যে সেজে উঠেছে খাগড়াছড়ি। ফুলের সুবাস, পাখির কণ্ঠস্বর আর রঙের ছোঁয়ায় ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে পরিবেশ। বসন্তের এই আমেজে খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজে আয়োজন করা হয় বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসব।
কলেজ ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ। বাহারি পিঠার পসরা নিয়ে শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় বিশেষ এই আয়োজনে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে হলুদ শাড়িতে সেজে কলেজ প্রাঙ্গণে আসেন শিক্ষার্থীরা। তাদের চোখেমুখে ছিল আনন্দের ঝিলিক, পুরনো-নতুন বন্ধুদের সঙ্গে এক আবেগঘন মিলনমেলা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ পুলক বরণ চাকমা, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মুহাম্মদ রিয়াজুল হক সোহেল, সহকারি অধ্যাপক জহিরুল ইসলামসহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অতিথিরা উৎসব পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষার্থীদের পিঠার বাহারি আয়োজন উপভোগ করেন।
পিঠা উৎসব শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কবিতা আবৃত্তি, নাচ, গান ও গল্প বলার মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশ আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। বসন্তের গান ও লোকজ সংস্কৃতির মিশেলে কলেজ ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে আনন্দময় মিলনস্থল।
শিক্ষার্থীরা নিজেদের তৈরি বিভিন্ন ধরনের পিঠার স্টল সাজিয়ে বসে, যেখানে ছিল চিকেন মোমো, ইলিশ পিঠা, পাক্কন পিঠা, জিমের পিঠা, লাচ্ছা বড়া, সান্নি পিঠা, ছোলা বুট, আচার ও পাস্কা, বস বড়া, পাজন, বড়া-পিঠা, ভাপা নারিকেল পুরি, পাটিশাপটা, কুমড়ো পিঠা, জাসাই পিঠা, কামরাঙ্গা পিঠা, নকশি পিঠা, মিষ্টি আলুর পিঠাসহ আরও নানা রকম ঐতিহ্যবাহী পিঠা।
এই আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা তৈরি এবং বসন্তের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। নবীন ও প্রবীণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়েছে, যা নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
এই উৎসব শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও দলগত অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করেছে। আয়োজনের মাধ্যমে তারা শুধু নিজেদের ঐতিহ্যকে লালনই করেনি, বরং নিজেদের শেকড়ের সঙ্গে আরও সংযুক্ত হয়েছে।
খাগড়াছড়ির বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসব কেবল এক দিনের আয়োজন নয়; এটি একটি মিলনমেলা, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে দেয় এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে সংযুক্ত করে। বসন্তের এই উৎসব আগামী বছরগুলোতেও একইভাবে প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
খাগড়াছড়ি নিয়ে আরও…
