উৎসবমুখর পরিবেশে ঐতিহাসিক খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
আজ মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয় অপ্রতিরোধ্য ও অপরাজিত দুই দল মারিশ্যা জোন বনাম মহালছড়ি জোন। উত্তেজনাপূর্ণ এ ম্যাচে মহালছড়ি জোনকে ২-১ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে মারিশ্যা জোন।
টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মোঃ আমান হাসান, এসপিপি, এনডিসি, পিএসসি।
ফাইনাল ম্যাচ শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দলের খেলোয়াড়দের মাঝে মেডেল প্রদান করা হয়। চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি ও এক লক্ষ টাকার প্রাইজমানি দেওয়া হয়, আর রানার্স আপ দল মহালছড়ি জোনকে দেওয়া হয় ট্রফি ও পঞ্চাশ হাজার টাকা। তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দল পেয়েছে ত্রিশ হাজার টাকা প্রাইজমানি।
এবারের টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন মারিশ্যা জোনের মো. মনজুরুল। সেরা গোলদাতা হন একই দলের মো. মাসুম। মহালছড়ি জোনের মো. জাহিদ নির্বাচিত হন ম্যান অব দ্য ম্যাচ।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাফজয়ী নারী ফুটবল তারকা মনিকা চাকমা এবং অনূর্ধ্ব-২০ দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষক আসিফ ভূঁইয়াকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাদের হাতে ২৫ হাজার টাকার চেক ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন রিজিয়ন কমান্ডার।
দর্শকরা প্রতিবারের মতো এবারও এমন আয়োজনের প্রশংসা করেন এবং প্রতি বছর রিজিয়ন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় মনিকা চাকমা ও আসিফ ভূঁইয়া তাদের অনুভূতি জানিয়ে ভবিষ্যতে দেশের জন্য আরও বড় অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়া। তিনি বলেন,
“এ টুর্নামেন্টের মাধ্যমে পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়েছে। বিপুল সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতি স্টেডিয়ামকে পাহাড়ি-বাঙালির মিলন মেলায় পরিণত করেছে।”
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান বলেন,
“পার্বত্য অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং খেলাধুলার প্রসারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রিজিয়ন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির মেলবন্ধন আরও শক্তিশালী হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই ধরণের টুর্নামেন্টের মাধ্যমে পাহাড়ের মানুষ সম্প্রীতির স্বর্গ রাজ্যে বসবাস করতে পারবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল হাসনাত জুয়েল, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা, পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার (জিটুআই) মেজর জাবির সোবহান মিয়াদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রুমানা আক্তারসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সামরিক কর্মকর্তা এবং সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
খেলা নিয়ে আরও…